পূর্বপুরুষের ভিটা ঘুরে গেলেন পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী
শাহ্ আলম ভূঁইয়া :
উপমহাদেশের প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় সংগীতের পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী
মঙ্গলবার দুপুরে পূর্বপুরুষের ভিটা স্ত্রী সন্তানসহ ঘুরে গেলেন।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুলী ইউনিয়নের পালাহার গ্রামের
বড়বাড়িতে সংগীত শাস্ত্রের পুরোধা অজয় চক্রবর্তী এসে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।
ছোট ছেলে অঞ্জন চক্রবর্তীকে দেখিয়ে পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী বলেন,‘এটা আমার পূর্বপুরুষের ভিটে। এই বড়বাড়িতেই আমার বাবা অজিত চক্রবতী ,
ঠাকুরদা রাম চন্দ্র চক্রবর্তীর স্মৃতি জড়িয়ে আছে।’
এ সময় তাঁর সাথে ছিলেন স্ত্রী অঞ্জনা চক্রবর্তী। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার
দিকে পূর্বপুরুষের ভিটায় আসলে এলাকাবাসী, স্থানীয় শিল্পী
ও সাংবাদিকরা তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী পূর্বপুরুষের ভিটায় এসে আশপাশের বাড়িতেও
স্ত্রী, সন্তান ও সফরসঙ্গীদের নিয়ে হেঁটে হেঁটে যান। এ সময় মুড়ির মোয়া খেতে
খেতে সাংবাদিকদের সাথেও কথা বলেন তিনি।
পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী অনলাইন পত্রিকা নান্দাইল নিউজকে জানান,
‘১৯৮৯ সালে ডিসেম্বর মাসে প্রথমবার এ ভিটায় আসেন। এবার স্ত্রী চন্দনা
চক্রবর্তী ও ছোট ছেলে অঞ্জনকে সাথে নিয়ে এসেছেন।
তিনি আরও বলেন, এটা আমার ঠাকুরদার
বাড়ি। এই বাড়িতে আমার বাবার
অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। বাড়িটি সংস্কার করা হবে।’
অজয় চক্রবর্তীর ঠাকুরদার বাড়িটি বর্তমানে দেখভাল করেন তাদের
বংশীয় অমূল্য চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি এবং প্রতিবেশী আব্দুর রহমান । তিনি তাদের হাতে কিছু
টাকা তুলে দেন প্রতিবেশীদের এক দুপুর পোলাও মাংস খাওয়ানোর জন্যে।
মুশুলী গ্রামের নির চন্দ্র দে নামে এক বৃদ্ধ জানান,
‘ছেলে বেলায় গ্রামে কির্তনের আসর হতো। সেখানে উনার বাবার সাথে আমিও থাকতাম।’
এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে পন্ডিত অজয় চক্রবতী শাস্ত্রীয়
সংগীত প্রসঙ্গে বলেন, ‘সংস্কৃতিতে কোন বিরোধ
নেই। কোন বেড়া নেই। ইচ্ছে আছে বাংলাদেশে
শাস্ত্রীয় সংগীত নিয়ে কাজ করার। এদেশেও অনেক ট্যালেন্ট
রয়েছে।’
দৈনিক ইত্তেফাক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই পত্রিকার নামটা আমার জানা আছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন পত্রিকা। আমাদের দেশের আনন্দ বাজার পত্রিকার মতোই জনপ্রিয়।’
প্রায় দুই ঘন্টা পূর্বপুরুষের ভিটায় অবস্থানকালে বংশীয় লোকজন
ও এলাকাবাসীর সাথে আন্তরিক ও সৌহার্দপূর্ণ ব্যবহার করেন। খোলামেলা কথা বলেন। এর আগের দিন সোমবার তিনি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর
মসুয়া এলাকায় ‘কবিরাজবাড়ি’ খ্যাত তাঁর মামার বাড়িতে যান।
পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী প্রসঙ্গে এদেশের শিল্পী অজয় শিকদার বলেন,‘শাস্ত্রীয় সংগীতের জগতে তিনি মহাসাগর। এই মহাসাগরের কাছ থেকে কতটুকুবা একজন নিতে
পারে বলুন ?’
প্রসঙ্গত, ২৯ নভেম্বর ঢাকার আর্মি
স্টেডিয়ামে বেঙ্গল আইটিসি এসআরএ শাস্ত্রীয় চার দিনের উৎসব অনুষ্ঠানে অংশ নিতে কলকাতা
থেকে গত সোমবার ঢাকায় এসেছেন পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী । বিমান বন্দরে নেমেই তিনি আপনজনদের স্মৃতি
বিজড়িত স্থানগুলো দেখতে চলে আসেন মনের টানে।