WELCOME TO NANDAIL NEWS - REFLECTION OF TIME - স্বাগতম- নান্দাইল নিউজ - সময়ের প্রতিচ্ছবি - স্বাগতম- নান্দাইল নিউজ -সময়ের প্রতিচ্ছবি - স্বাগতম- নান্দাইল নিউজ - সময়ের প্রতিচ্ছবি - স্বাগতম- নান্দাইল নিউজ -সময়ের প্রতিচ্ছবি - স্বাগতম- নান্দাইল নিউজ - সময়ের প্রতিচ্ছবি - স্বাগতম- নান্দাইল নিউজ - সময়ের প্রতিচ্ছবি

Thursday, February 16, 2012

মঞ্চ থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র_প্রতিটি মাধ্যমেই অনন্য উদাহরণ হয়ে আছেন হুমায়ুন ফরীদি। তাঁর অভিনীত অনেক চরিত্রই বেঁচে আছে যুগ যুগ ধরে।

সংশপ্তক’-এর কানকাটা রমজান
ফেরদৌসী মজুমদার
‘সংশপ্তক’-এ কানকাটা রমজানের ভুমিকায় কী অসাধারণ অভিনয়শৈলী দেখিয়েছে ফরীদি; সেটা যাঁরা দেখেছেন কখনও ভুলবেন না।
আমার সৌভাগ্য এসব নাটকে আমি তার সহশিল্পী ছিলাম। হুরমতী’র ভুমিকায় অভিনয় করে কানকাটা রমজানের সঙ্গে আমি ‘হুরমতী’ ও দর্শকের মন জয় করে বসে আছি। আমি বিশ্বাস করি এবং দেখেছি সহশিল্পীর ওপরেও ভালো অভিনয় কনেকখানি নির্ভর করে।
দহন : চমকে দিয়েছিল সবাইকে
প্রবীর মিত্র
হুমায়ুন ফরীদিকে প্রথম দেখেছিলাম ‘দহন’ ছবির সেটেই। সে অভিনয় করেছে মুনির চরিত্রে। আমাকে দেখে সে বলেছিল, ‘দাদা, আমি আপনার খুব ভক্ত। প্রথমবারের মতো আপনার সঙ্গে ক্যামেরায় দাঁড়াব। জানি না, কতটুকু পারব। তবে দোয়া করবেন।’ আমি তার বিনয়ী ভাব দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমি জানতাম, সে তুখোড় অভিনেতা। মঞ্চে একাই দর্শক বসিয়ে রাখতে পারে। দহনে ফরীদির অভিনয় চমকে দিয়েছিল সবাইকে। কাজের প্রতি, শিল্পের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ছিল তাঁর। এ ছবির জন্য সে বাচসাস পুরস্কার পেয়েছিল।
‘একাত্তরের যীশু’র ডেসমন্ড
পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়
এই ছবিতে ফরীদি অভিনয় করেছিল ডেসমন্ড চরিত্রে। গল্পটি একটি জেলে পাড়াকে ঘিরে। স্বাধীনতা যুদ্ধে সেই গ্রামে জড়ো হয় শহর থেকে পালিয়ে আসা শত শত মানুষ। ডেসমন্ড তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে সেই মানুষের সেবায় ঝাপিয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, পাকি বাহিনী যখন এই গ্রামেও আক্রমণ শুরু করে, তখন পালিয়ে যায় অনেকেই। সেই অনেকের মিছিল যোগ দেয় না ডেসমন্ড। পরে সে হয়ে ওঠে মুক্তিযোদ্ধাদের এক অভয় আশ্রম।
সন্ত্রাস : জাফর ইকবাল ফরীদির সঙ্গে ড্রামায় যেতে চাইত না
শহীদুল ইসলাম খোকন
ফরীদি ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ফরিদপুরে গিয়ে। সেখানে তাঁর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ভাই, আপনি বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করেন না কেন?’ তিনি বললেন, ‘আমাকে তো কেউ নেয় না!’ আমি বললাম, ‘আপনি কোন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে চান বলুন।’ তিনি বললেন, ‘এই মনে করুন, একজন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, মদ-গাঁজা খায় না, এমনকি মেয়েমানুষের প্রতিও লোভ নেই। অথচ সে খুবই ভয়ংকর মানুষ।’ আমি তাঁর ইচ্ছাটা বুঝলাম। পরে সেই অনুযায়ী একটি চরিত্র দাঁড় করালাম। তিনি পছন্দ করলেন। শুটিংয়ে গিয়ে প্রায়ই একটা সমস্যা আমাকে সামলাতে হতো। জাফর ইকবাল কখনোই ফরীদির সঙ্গে ড্রামায় যেতে চাইত না। বলত, ‘মার খেয়ে যাব।’ আমি অনেক বুঝিয়ে রাজি করাতাম। তবুও ফরীদি কিন্তু ওকে কোণঠাসা করতই। মজা করে আমাকে বলত, ‘খোকন ভাই, জাফর ইকবাল আমাকে ভয় পায় ক্যান? ও তো নায়ক, আর আমি ভিলেন। শেষে মরতে তো আমারই হবে!’
‘ভাঙনের শব্দ শুনি’র সিরাজ তালুকদার
আলী রাজ
ফরীদি ভাই প্রতিদিনই আমাকে নিয়ে মহড়াকক্ষে যেতেন। বলতেন, “যদি এ নাটকের তোর চরিত্রটি দাঁড় করাতে পারিস, তাহলে আর পিছু তাকাতে হবে না।’ সত্যিই তাই। ফরীদি ভাইয়ের ‘সিরাজ তালুকদার’ চরিত্রটি যেমন জনপ্রিয় হয়েছিল, ঠিক তেমনি আমার ‘ইছুপ’ (ইউসুফ) চরিত্রটিও হয়েছিল সর্বজন সমাদৃত। একদিন ফরীদি ভাই আর আমি মহড়াকক্ষ থেকে বেরিয়েছি বাসায় ফিরব বলে। বাইরে তুমুল বৃষ্টি। তিনি বললেন, ‘চল, রিকশায় করে বাসায় ফিরি। তুই আজ আমার ওখানে থাকিস।’ আমি রাজি হলাম। মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। হঠাৎ ফরীদি ভাই জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাড়া কি তুই দিবি, না আমি দেব?’ আমি বললাম, ‘তুমি দিবা। বড় ভাই হয়েছে, জমি না কিনে পানি কিনছ। আর সামান্য রিকশা ভাড়া দিতে পারবা না?’ তিনি হা হা করে হেসে উঠলেন। বললেন, ‘ঠিক আছে, তাহলে রিকশার হুড ফেলা। ভিজতে ভিজতে যাব।’ সেদিন ভেজার সঙ্গে হুমায়ুন ফরীদির কণ্ঠে লালনগীতিটাও ভালো লেগেছিল।